এন্ড্রয়েড ফোনের স্পিড বাড়ানোর ৫ টি কার্যকরী উপায় - How to Speed Up Your Android Mobile


আসসালামু আলাইকুম। বর্তমান বিশ্বে স্মার্টফোন ব্যবহার করেনা এমন মানুষ হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবেনা। অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করতে করতে অনেক সময় স্লো হয়ে যায় অথবা হ্যাং করে। এটা অনেক বিরক্ত দায়ক একটা বিষয়। ধরুন অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতেছি হঠাৎ করে ফোনটা স্লো হয়ে গেলো অথবা হ্যাং করলো, এটা সত্যিই মানা যায় না। 


ফোনের স্পিড পারফরম্যান্স এর উপরে নির্ভর করলেও, ইউজার এর উপরেও অনেকটা নির্ভর করে। সহজ কথায় ফোনটা যে ব্যবহার করতেছে তার ব্যবহারের ধরনের উপরেও ফোনের স্পিড অনেকাংশে নির্ভর করে। কিছু নিয়ম মেনে এবং কয়েকটা সেটিং পরিবর্তন করেই আমাদের এই এন্ড্রয়েড ফোনের স্পিড টাকে আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে নিতে পারি। এই পোস্টের মাধ্যমে আমি আপনাদেরকে জানাবো এন্ড্রয়েড ফোনের স্পিড বাড়ানোর ৫ টি কার্যকরী উপায়। 


১। অপ্রয়োজনীয় অ্যাপস Uninstall করুন:

এন্ড্রয়েড ফোনের স্পিড বাড়ানোর সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হচ্ছে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপস Uninstall করে দেওয়া। কারণ আমরা অনেকেই আছি যারা কোন প্রয়োজন ছাড়াই ফোনে অতিরিক্ত অ্যাপস ইন্সটল করে রাখি। হয়তোবা সেটা মাসেও একবার ব্যবহার করিনা। এর জন্য হয়তো আপনার স্টোরেজ বেশি জায়গা কমছেনা তবে এটা আপনার ফোনের Ram এ অনেক বড় একটা জায়গা দখল করে আছে। অতিরিক্ত আ্যাপস ইন্সটল করে ফোনটাকে ভারি করবেন না। 


সব সময় চেষ্টা করবেন যত কম অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করা যায়। এবং অনেকে আরেকটা ভুল করে থাকে স্পিড বাড়ানোর জন্য অনেক অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে। একটা কথা মাথায় রাখতে হবে: কোন এপ্লিকেশন অথবা সফটওয়্যার আপনার ফোনে ১% ও স্পিড বাড়ানোর ক্ষমতা রাখে না। উল্টা এই অ্যাপস গুলো আপনার ফোনের Ram দখল করে স্পিড কমিয়ে দেয়। তাই এই ধরনের অ্যাপ্লিকেশন একদমই ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবেন। এই অপ্রয়োজনীয় অ্যাপস এখনই Uninstall করে দিন। শুধুমাত্র গুরুত্বপূর্ণ অ্যাপগুলো রাখবেন।  



২। ইন্টারনাল স্টোরেজ যতটা সম্ভব খালি রাখবেন:



এন্ড্রয়েড ফোনের স্পিড বাড়ানোর আরেকটা কার্যকারী উপায় হচ্ছে, আপনার ফোনের ইন্টারনাল স্টোরেজ অর্থাৎ ফোন মেমোরি যতটা সম্ভব খালি রাখা। এখানে আমি আপনাকে একদমই ফাঁকা রাখতে বলছিনা। আপনার সাধ্য অনুযায়ী এখানে ফাঁকা রাখবেন। এক্সাম্পেল হিসেবে আমি এর প্রয়োজনীয়তা একটু আপনাদের সাথে আলোচনা করি, তাহলে আপনারা বুঝতে পারবেন যে, কেন আমি ফোন মেমোরি ফাঁকা রাখতে বলতেছি। ধরুন আপনার ফোনে ১ জিবি একটা সফটওয়্যার/গেমস ইন্সটল করলেন। আপনি যখন ওই গেম টি খেলবেন তখন ওই গেমের ডাটাগুলো লোড করতে গেমটি আপনার ফোনের ইন্টারনাল স্টোরেজকে ব্যবহার করে। 


সেক্ষেত্রে ১ জিবি এর একটা গেম খেলতে অন্তত ১ থেকে ২ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজ বা ফোন মেমোরি ফাঁকা রাখা ভালো। কারন গেমটা যখনই  স্টোরেজ এ পর্যাপ্ত জায়গা না পাবে, তখন ফোনটা অটোমেটিকলি স্লো হয়ে যাবে। এবং আপনার ফোন হ্যাং করতেও পারে। সেক্ষেত্রে যদি আপনার ইন্টারনাল স্টোরেজ পর্যাপ্ত পরিমাণ ফাকা থাকে তাহলে গেম টা সহজেই স্টোরেজ কে কাজে লাগাতে পারবে এবং আপনার ফোনটা বিন্দু মাত্র স্লো হবেনা। তাই যতটা সম্ভব ফোন মেমোরি ফাঁকা রাখার চেষ্টা করবেন। ইন্টারনাল স্টোরেজ বা ফোন মেমোরি কিছুটা জায়গা খালি রাখলে অ্যাপগুলো খুব স্মুথভাবে রান করবে। আর ফোনের স্পিড ও কমবেনা।


৩। ফোনে মেমোরি কার্ড ব্যবহার করুন:



ফোনের ইন্টারনাল স্টোরেজ ফাঁকা রাখার জন্য আপনি চাইলে একটা এসডি-কার্ড বা মেমোরি কার্ড ব্যবহার করতে পারেন। তবে এখানে মেমোরি কার্ড ব্যবহার করার ক্ষেত্রে যে ২ টা বিষয় আপনার মাথায় রাখতে হবে।

১. মেমোরি কার্ডের ডাটা লোডিং স্পিড যেনো বেশি হয়। আপনার মেমোরি কার্ডের ডাটা লোডিং স্পিড যদি কম হয় তাহলে ওই মেমোরি ব্যবহার করলে ফোনের স্পিড বেশি হওয়া তো দূরের কথা উল্টা কমে যাবে। মোমোরি ক্রয় করার আগে অবশ্যই এই বিষয় টা মাথায় রাখবেন, যেন আপনার মাইক্রো-এসডি কার্ডের ডাটা ট্রান্সফার স্পিড অনেক বেশি থাকে।

২. অবশ্যই একটি ভালো ব্র্যান্ডের মেমোরি কার্ড কিনবেন। কারণ মেমোরি কার্ডে আমাদের অনেক প্রয়োজনীয় ছবি, ভিডিও অডিও, তথ্য বা ফাইল থাকে। যা আমাদের জীবনে অনেক গুরুত্ব বহন করে। এটা যদি হঠাৎ করেই ফরম্যাট হয়ে যায় অথবা ডিলিট হয়ে যায় এটা অনেক বড় একটা কষ্টের বিষয়। তাই অবশ্যই মেমোরি কার্ড ক্রয় করার সময় ২ টাকা বেশি গেলেও ভালো ব্র্যান্ডের মেমোরি কার্ড কিনবেন।


৪। টাস্ক ম্যানেজার ক্লিয়ার কম করুন:


আপনারা অনেকেই মনে করেন টাস্ক ম্যানেজার ক্লিয়ার করলে ফোনে অতিরিক্ত স্পিড পাবেন। তাই সব সময় একটি অ্যাপস থেকে বের হয়ে অন্য একটি অ্যাপস এ যাওয়ার আগে রিসেন্ট অ্যাপ থেকে পূর্বের অ্যাপস টা কেটে দেন। আপনাদের এই ধারণাটা সম্পূর্ণ ভুল। কারণ একটা এপ্লিকেশন যখন আপনি ক্লোজ করে পুনরায় আবার ওপেন করবেন তখন আপনার ফোনে প্রচুর পরিমাণে প্রেসার পড়বে। তাই যে অ্যাপ্লিকেশন গুলোতে আপনি কাজ করবেন সেগুলো রিসেন্ট ট্যাবে এভাবে মিনিমাইজ করে রেখে দিন। বার বার আ্যাপস কেটে দিয়ে আবার ওপেন করা থেকে বিরত থাকুন। তাহলে দেখবেন আপনার ফোনের স্পিড স্বাভাবিক থাকবে। পাশাপাশি একসাথে অনেকগুলো অ্যাপস ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবেন। এতে ফোন স্লো হয়ে যায়।



৫। ফোনের অপারেটিং সিস্টেম ও অ্যাপস আপডেট করুন।

ফোনে যদি কোন সিস্টেম আপডেট আসে, তাহলে সেটা ডাউনলোড করে ইন্সটল দিয়ে ফেলুন। পুরাতন ভার্সন এ অনেক সময় ফোন স্লো কাজ করে। এরজন্য ফোন কোম্পানি নতুন নতুন সিস্টেম আপডেট নিয়ে আসে। অবশ্যই নতুন সিস্টেম আপডেট আসা মাত্রই আপনার ফোনে ইন্সটল করে ফেলুন। সেক্ষেত্রে আপনার ফোন পূর্বের তুলনায় আরো বেশি স্পিডে কাজ করবে এবং আমরা যে সফটওয়্যার গুলো প্রতিনিয়ত ব্যবহার করে থাকি এই সফটওয়্যার গুলো আপডেট এর প্রয়োজন আছে। তাই যখনই সফটওয়্যার গুলো আপডেট চাইবে, সম্ভব হলে আপডেট ভার্সন ব্যবহার করার জন্য চেষ্টা করবেন।  তাহলে ফোনের স্পিড ভাল পাবেন এবং ফোন হ্যাং করবেনা। ফোনের ওএস এবং অ্যাপস আপডেট দেওয়ার মাধ্যমে ফোনকে আপডেট রাখার চেষ্টা করুন।


উপরে উল্লেখিত সকল পদ্ধতি মেনে চলার পরও আপনার ফোনের স্পিডের যদি কোনো উন্নতি না হয়, তবে বুঝবেন এ বৌ নিয়ে সংসার করা আপনার পক্ষে আর সম্ভব না😁। সেক্ষেত্রে আপনি নতুন ফোন কেনার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। 

2 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন