অনলাইনে ক্যারিয়ার গড়তে চান? সেরা ৫ টা উপায় - Best 5 Way To Earn Money Online


আসসালামু আলাইকুম!! বন্ধুরা আপনাদের ভিতরে এমন অনেকেই আছেন যারা অনলাইনে ক্যারিয়ার গড়তে চান। অনলাইন থেকে ইনকাম করতে চান, আজকের এই ব্লগে আপনাদের জন্য সেরা (৫ টা) আইডিয়া শেয়ার করবো। পছন্দমতো এখান থেকে যেকোন একটা বিষয় বেছে নিয়ে যদি নিয়মিত কাজ করে যান তাহলে ইনশাআল্লাহ অনলাইনে আপনার ক্যারিয়ারটা সেটেল হয়ে যাবে। আপনি অনলাইন থেকে প্রতিমাসে ভালো পরিমান টাকা  ইনকাম করতে পারবেন। এবং সম্পুর্ন বৈধ উপায়ে। 


ইন্টারনেট থেকে শর্টকাট এ ইনকামের যে রাস্তাগুলো আছে সেখানে সময় নষ্ট না করে  যদি আপনি অনলাইনে ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাহলে অবশ্যই এখানে আপনার লং টাইম ধরে কাজ করতে হবে। যেমন একটা ফল গাছের উদাহরণ দিয়ে বলি: একটা গাছ থেকে যখন আপনি ফল খেতে চাচ্ছেন তখন গাছটাকে প্রথমে আপনার রোপণ করতে হবে, তারপরে গাছটাকে পরিচর্যা করতে হবে, আস্তে আস্তে গাছটা বড় হবে, তারপর আপনাকে ফল দিবে। এবং আপনি লংটাইম ধরে সেই গাছের ফল খেতে পারবেন। 


প্রথম দিকে অবশ্যই আপনাকে এখানে পরিশ্রম করতে হবে। পরবর্তীতে যখন আপনার একটা পজিশন তৈরি হয়ে যাবে, তখন এখান থেকে অটোমেটিক আপনার ইনকাম চলে আসবে। তখন আর এত বেশি পরিশ্রম করা লাগবে না। তবে অবশ্যই ধৈর্য ধরে, সময় নিয়ে আপনাকে পড়ে থাকতে হবে। বেশি কথা না বলে চলুন সরাসরি আইডিয়া গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করে ফেলি।



১। আর্টিকেল রাইটিং।

আজকের লিস্টে প্রথমে রাখছি আর্টিকেল রাইটিং আপনি গুগলের যে ব্লগ সাইট রয়েছে অথবা ওয়াডপ্রেস কিংবা নিজের ইচ্ছামতো যেকোনো একটা ব্লগসাইট তৈরী করে, সেখানে আপনি আপনার নিজের ইচ্ছামত যেগুলো আপনার ভালো লাগে, যে বিষয়ে আপনি দক্ষ সেই বিষয়ে আপনি এখানে মনের মতো করে লেখালেখি করতে পারেন। দরকার হলে আপনি গুগল কিংবা ইউটিউব থেকে হেল্প নিতে পারেন, আর্টিকেল রাইটিং বিভিন্ন টিপস এন্ড ট্রিকস দেখে আপনি সুন্দর করে আর্টিকেল লিখবেন। আপনি যে টপিক নিয়ে লিখছেন সেটা যদি সুন্দরভাবে আপনি প্রেজেন্ট করতে পারেন। এবং আপনি যদি গ্রাহক আপনার পেজের ভিতর ধরে রাখতে পারেন, তাহলে এখান থেকে আপনি সফলতা অবশ্যই পাবেন। 


আর্টিকেল লেখার সময় সব সময় একটা বিষয় মাথায় রাখবেন যেন আর্টিকেলটা একটু বড় হয়। আপনার আর্টিকেলটা যদি বড় করতে পারবেন এটা গুগল সার্চ রেংকিংয়ে সহজে চলে আসবে। আপনাকে অবশ্যই মানসম্মত ব্লগ লিখতে হবে এবং এটার মাধ্যমে আপনি যদি ইনকাম করতে চান, তাহলে গুগল এ্যাডসেন্সের মাধ্যমে এ্যাড বসিয়ে এখান থেকে ইনকাম করতে পারবেন। এবং চাইলে গুগোল নেটওয়ার্কের বাইরে অন্যান্য নেটওয়ার্ক এ্যাড করেও এখান থেকে ইনকাম করতে পারবেন। সুধুমাত্র আর্টিকেল রাইটিং করে প্রতিমাসে বড় একটা এমাউন্ট ইনকাম করা সম্ভব। তবে সময় দিতে হবে এবং ধৈর্য ধরে কন্টিনিউ করে যেতে হবে।



২। ইউটিউব এবং ফেসবুক মার্কেটিং।

ইউটিউব মার্কেটিংঃ

আপনি ঠিক এই মুহূর্তে যার ব্লক টা পড়ছেন সেও একজন ছোট ইউটিউবার। ইউটিউব থেকেও প্রতিমাসে ভালো পরিমাণ একটা ইনকাম জেনারেট করা সম্ভব! আপনি যে বিষয়ে দক্ষ, এই বিষয়ের উপরে ইউটিউবে একটা চ্যানেল খুলে ফেলুন এবং আপনি আপনার পছন্দমত ওই বিষয়ের উপরে সেরা টপিকগুলো নির্বাচন করে, সুন্দর করে আপনার ভিডিওটা কে উপস্থাপন করার চেষ্টা করুন! আস্তে আস্তে ভিজিটর আসবে, সেখান থেকে আপনার সাবস্ক্রাইবার আসবে এবং যখন আপনার ১০০০ সাবস্ক্রাইবার এবং ৪০০০ ঘন্টা ওয়াচ টাইম অর্থাৎ ২ লক্ষ ৪০ হাজার মিনিট পূরণ হয়ে যাবে তখন আপনি এ্যাডসেন্স এবং মনিটাইজেশন এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। 


তারপর ইউটিউব আপনার চ্যানেলটাকে রিভিউ করবে, সবকিছু যদি ঠিক থাকে তাহলে আপনার চ্যানেলে মনিটাইজ অন করে দিবে এবং তারপর থেকেই আপনার চ্যানেলের সমস্ত ভিডিওতে এ্যাড সেট করেই আপনি এ্যাড এর মাধ্যমে ইউটিউব থেকে ইনকাম করতে পারবেন এবং ইনকাম এর টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে সরাসরি আপনার পকেটে নিয়ে আসতে পারবেন। তাই আপনার ভিতরে যদি এমন কোনো ক্রিয়েটিভিটি থাকে যেটা আপনি মানুষের সাথে শেয়ার করতে চান এবং সেটার মাধ্যমে ইনকাম জেনারেট করতে চান তাহলে আমার মতে ইউটিউব টা আপনার জন্য বেস্ট হবে।


ফেসবুক মার্কেটিংঃ

বর্তমান সময়ে ফেসবুক থেকেও ইউটিউবের মত ইনকাম করা যাচ্ছে! আপনি ফেসবুকে একটা পেজ খুলবেন এবং সেই পেজে আপনার ১০০০ ফলোয়ার থাকলে আপনি ইউটিউব এর মত আপনার পেজটাকে মনিটাইজ করতে পারছেন। আপনার পেজে ভিডিও আপলোড করে সেই ভিডিওতে এ্যাড সেট করে ইউটিউব এর মত ফেসবুক থেকেও ইনকাম করতে পারবেন। এখানে একটা মজার বিষয় হলো ইউটিউবে শুধুমাত্র মানুষ ভিডিও দেখতে যায়, কিন্তু ফেসবুকে মানুষ যখন বিনোদন নিতে আসে তখন সামনে একটা ভিডিও আসলেই মানুষ ক্লিক করে দেয়। সেক্ষেত্রে ইউটিউব থেকে ফেসবুকে ভিজিটর একটু ভিন্ন টাইপের এবং সহজে এখান থেকে ভিজিটর পাওয়া যায়। যদিও ইউটিউবের তুলনায় ফেসবুকে ইনকাম টা একটু কম, কারন ফেসবুকে এ্যাড কম সো করে। তবে এটা পরবর্তিতে ইনক্রিজ হবে। তাই আপনি চাইলে ভিডিও মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে ইউটিউবকেও বেছে নিতে পারেন।



৩। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকেও আপনি প্রতিমাসে অনেক বেশি ইনকাম জেনারেট করতে পারবেন। আপনি জানলে অবাক হবেন, যাদের ভালো একটা ব্লগ সাইট এবং ভালো একটা ইউটিউব চ্যানেল অথবা বড়ো একটা ফেসবুক পেজ/গ্রুপ আছে এই মানুষগুলো কিন্তু বসে থাকেনা তারা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে থাকে। ডেসক্রিপশনে অথবা ডিটেইলসে তারা ওখানে অ্যাফিলিয়েট লিংক টা শেয়ার করে দেয়, ভিজিটর লিংকে ক্লিক করিয়ে তারা ইনকাম করে। অ্যাফিলিয়েট ইনকামের জন্য আপনার মোটেও পরিশ্রম করা লাগতেছে না।


ভিজিটর আসতেছে অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক থেকে ক্লিক করে তারা আপনার উক্ত কাজটা করতেছে অথবা প্রডাক্ট দেখা বা ক্রয় করতেছে সেক্ষেত্রে % ইনকামটা অটোমেটিকলি আপনার একাউন্টে যোগ হয়ে যাচ্ছে। এবং এটা ইনকামের সবথেকে সহজ উপায় বলা যায়। তবে এর জন্য অবশ্যই আপনার নিজের পজিশন টা তৈরি করতে হবে। এখন হয়তো আপনাদের মনে প্রশ্ন আসছে আমি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং টা কিভাবে করতে পারি বা বাংলাদেশে এরকম সুযোগ আছে কি-না? হ্যাঁ বাংলাদেশে অনেক ওয়ে রয়েছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার। আপনি চাইলে বাংলাদেশ থেকেও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারবেন। অনেক প্ল্যাটফর্ম রয়েছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার সেগুলো নিয়ে আমি বিস্তারিত পরে একটা ব্লগে আপনাদের সাথে আলোচনা করবো।



৪। ফটোগ্রাফি।


যদি আপনার ভালো একটা স্মার্টফোন এবং একটা ডিএসএলআর ক্যামেরা থাকে এবং ছবি তোলা যদি আপনার শখ হয়ে থাকে, তাহলে এই শখের ছবিগুলো অনলাইনে বিক্রি করে এখান থেকে আপনি প্রতিমাসে ভালো একটা এমাউন্ট ইনকাম করতে পারবেন। আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন না অনলাইনে যখন আমরা কোনো টপিকের উপর একটা ছবি ডাউনলোড করার জন্য গুগলে সার্চ করি, খেয়াল করে দেখবেন অনেক ছবির ভিতরে ওয়েবসাইটের নাম এবং লোগো দেওয়া থাকে, ঠিক এই গুলোই হলো পেইড ছবি। 


কেউ একজন এই ওয়েবসাইটে এসে তার ছবিটা বিক্রি করার জন্য এখানে আপলোড করে রেখেছে এবং ওয়েবসাইট ছবির উপরে ওয়াটারমার্ক লাগিয়ে দিয়েছে। আপনিও চাইলে এসব ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করে আপনার ছবিগুলো এখানে আপলোড করে রাখতে পারেন। কেউ যখন এই ছবি কিনবে তখন অটোমেটিকলি আপনার একাউন্টে % টাকা জমা হয়ে যাবে। মানুষ ছবিটা যতবার ডাউনলোড করবে বা কিনবে ঠিক ততোবার একটা পার্সেন্টেজ কিন্তু আপনি পাবেন।



৫। গ্রাফিক ডিজাইন।

গ্রাফিক ডিজাইন একটা প্রফেশনাল কাজ। এখানে কাজ করতে হলে অবশ্যই আপনাকে আগে কাজটা সঠিক ভাবে শিখতে হবে। আপনি চাইলে কোথাও কোর্স করতে পারেন অথবা ইউটিউব গুগলে সার্চ করে নিজে ঘরে বসেই কাজগুলো শিখে নিতে পারবেন। যখন এখানে আপনি দক্ষ হয়ে যাবেন তখন ফাইবার, আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সার, এর মত সাইটে একাউন্ট ক্রিয়েট করে ডিজাইনগুলো দেশী-বিদেশী বায়ারদের কাছে বিক্রি করে অনেক ডলার ইনকাম করতে পারবেন। নতুনদের জন্য সাজেশন থাকবে আপনারা ফাইবারে একটা একাউন্ট ক্রিয়েট করে সেখানে আপনার দক্ষ বিষয় গুলোর উপরে গিগ আপলোড করবেন। এসব সাইটে আপনার ডিজাইন বিক্রি করে ইনকাম করতে পারবেন।


ইন্টারনেট থেকে ইনকাম অথবা যারা অনলাইনে ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাদের জন্য আসলে আজকের ব্লগ! উপরে আমি সেরা পাঁচটি বিষয় আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। যেকোন বিষয় যেটা আপনার ভালো লেগেছে আপনি চাইলে সেটা নিয়ে এগোতে পারেন। সময় দিতে হবে, পরিশ্রম করতে হবে, তবেই একদিন সফল হওয়া যাবে। 


যদি আমার আইডিয়া গুলো আপনার ভালো লেগে থাকে এবং কাজে এসে থাকে, আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন! এতো সময় কষ্ট করে আমার পোস্টটা পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

3 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন